তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়া অনেক বাইক ব্যবহারকারীরা বাইক বিক্রির চিন্তা করছেন। আবার অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাইক ভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট দিচ্ছেন বাইক বিক্রি নিয়ে। গতকাল শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। তেল নিতে আসা এক চাকুরিজীবি আনিস জানান, বাইক আর চালামু না ভাই। একটা ঠরঠরি সাইকেল কিনা চালামু। কাজের তাগিদে প্রতিদিন বাইক নিয়ে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে হয় আমাদের। এখন এমন পরিস্থিতিতে আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আগে যে সংসার মাসে ৬ হাজার টাকা দিয়ে চালাতাম, এখন তা বেড়ে ৯ হাজারে ঠেকেছে। আর যদি বর্তমান তেলের বাজারে মোটরসাইকেল চালানো হয়, তাহলে সংসার আর চলবে না। বাইকে তেল তুলেই সারা মাসের ইনকাম শেষ হয়ে যাবে।
আরেক বাইকার মেহেদী হাসান বলেন, ‘এখন আর বাইক চালানো যাবে না। ভাবছি বাইক বিক্রি করে বাই সাইকেল কিনবো। এক লাফে আধাগুণ তেলের দাম বাড়ানো অযৌক্তিক। সরকার আমাদের নিয়ে কিছুই ভাবে না। শুধু বড় বড় কথা বলে আমাদের পথে বসাতে চাচ্ছে।’
প্রজ্ঞাপনে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে ভোক্তা পর্যায়ে ৩৪ টাকা বাড়ায় সরকার। অকটেনের দাম বাড়ে ৪৬ টাকা, পেট্রোলের দাম বাড়ে ৪৪ টাকা। অর্থাৎ রাত ১২টার পর থেকে ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রোল ১৩০ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে।
জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক বিকল্প হিসেবে গণপরিবাহন ব্যবহার করবেন বলে জানান। এর ফলে মোটরসাইকেল বিক্রি হিড়িক পড়েছে অনলাইনে।
রাজধানীর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতিদিন নরসিংদী থেকে এসে ক্লাস করি। আগের জ্বালানীর মূল্য অনুযায়ী খরচ হতো প্রায় ১৬০ টাকার মতো। জ্বালানীর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার এখন তার খরচ বেড়ে প্রায় ২৫০ টাকার মতো হবে। আমি একজন ছাত্র হিসেবে লেখা পড়ার পাশাপাশি এই খরচ বহন করতে পারবো না। তাই আপাদত্ত বাইক বিক্রির চিন্তা করতেছি।
এদিকে বাইক ব্যবহার বিষয়ে নাইম হাসান নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবির সাথে কথা হলে জানান, আমি প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ থেকে মোহাম্মদপুর এসে অফিস করি। আগে প্রতিদিন টোল ও তেল ব্যবহারে খরচ হতো ১৫০ টাকার মতো। এখন তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খবর বেড়ে ২শ টাকার উপরে চলে যাচ্ছে। এ জন্য আপাদত্ত বাইক ব্যবহার করবো না। গণপরিবহণ ব্যবহারের চিন্তা করছি।
সুজন নামের একজনের সাথে হলে জানান, সবে মাত্র চাকরিতে পদোন্নতি পেয়েছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাইক কিনবো। জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে এসেছি। আগের মতো গণপরিবহন ব্যবহার করে অফিসে যাতায়াত করবো।